Monday, October 25, 2010

একজন কাছের মানুষ !

৪ মাস আগের কথা। আমি ১০ দিনের ছুটিতে দেশে গিয়েছি। একদিন আমি,কনক,প্রতিম আর সজীব চারজন মিলে মিরপুর কাজীপাড়া যাচ্ছি বাসে করে। কনক-আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুর একজন ,সজীব আমার অতি প্রিয় আর কাছের একজন ছোটভাই, আর প্রতিম ? সেও আমার প্রিয় এক ছোট ভাই, সাথে সাথে আমার সাংগঠনিক বন্ধু।রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম দেখে আমরা ফার্মগেট থেকে হাঁটতে শুরু করি। সামনে সজীব আর প্রতিম এবং পেছনে আমি আর কনক। হাটছি আর গল্প করছি। কত যে গল্প……….!!!!!!! এই গল্প থেকে আবার সেই গল্প। কাজীপাড়ার বাসায় সজীবের কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিক করলাম সুমন ভাইয়ার সাথে দেখা করব। এর ঠিক দুইমাস আগে ভাইয়া বিয়ে করেছে। তাই নতুন ভাবিকে দেখার একপ্রকার অকুলতাও অনুভব করছিলাম। হঠাৎ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হল। তবুও আমরা হাটতে থাকলাম। এক-সময় পায়ে ব্যথা ধরে যাওয়ায় আমরা বাসে করে মিরপুর ১০ নাম্বারে গিয়ে নামলাম। দিনটি ছিল শুক্রবার, ছুটির দিন। নামাযের সময় প্রায় পেরিয়ে গেছে। সুমন ভাইয়াকে ফোন করে বললাম, আমি এখন মিরপুর ১০ নাম্বার এ, তুমি কই ? আমিতো এখন নামাযে ভাইয়া। তুই একটা কাজ কর ওখানে দাঁড়া আমি আসছি। ১৫ মিনিট পরে সুমন ভাইয়া আসল । আমায় দেখা মাত্রই মুখে স্নিগ্ধ হাসি দিয়েই জড়িয়ে ধরল। বলল, কেমন আছিস রে ভাইয়া ? আমি বলি, ভালো। তারপর আমরা সবাই মিলে ভাইয়ার বাসায় গেলাম। নতুন বিবহিত ভাইয়ের বাসায় ছুটির দিনে দুপুরে হঠাৎ ৪ জন মেহমান এসে উপস্থিত হলে কেমন লাগে বলুন ??? নিশ্চই যার বাড়িতে যাওয়া হয় তার মনের কোথাও না কোথাও একটু বিরক্তির সৃষ্টি হয়। অথচ আমরা বাড়িতে যাওয়ার পর ভাবী অনেক ভালো ভাবেই আমাদের গ্রহণ করলেন। আমরা সোফায় বসে সুমন ভাইয়ার সাথে হরেক রকম গল্প করছি। আর রান্নাঘরে বেচারি নতুন ভাবী এই ৪ জন অঘোষিত মেহমানের জন্য রান্না করছেন। আমরা সবাই মিলে ভাইয়ার বিয়ের ছবি গুলো দেখলাম আর ভাইয়ার  সাথে মজা করলাম। ইতোমধ্যেই খিদায় পেট চো চো করছে। রান্না শেষে আমরা সবাই খেতে বসলাম আর ভাবি সুযোগ্য গৃহিনীর মত অতি যত্নে পরিবেশন করলেন। আমি ভেবে অবাক এত কম সময়ের মধ্যে তিনি কিভাবে ৬ রকমের তরকারী রান্না করে ফেললেন ! কিন্তু তখন এত কিছু ভাবার সময় কই ! সবাই খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত। আধাঘন্টা ধরে আমরা খাইলাম। পেটের মাঝে এক আঙ্গুল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা ছিল না। তৃপ্তি করে খাওয়ানোর পর ভাবি খেতে বসলেন।কনক, প্রতিমকে তিনি বিয়ের পরেই দেখেছেন কিন্তু আমাকে দেখে নি। তাই খাওয়ার টেবিলে বসে তিনি আমার সাথে গল্প করছিলেন। আর আমি মালয়শিয়াতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের বিচিত্র সব অভিঙ্গতার কথা বলছি। তিন শুনছেন আর হাসছেন। যতদূর জানি, ভাবী একটি ভালো স্কুলে পড়ান। তিনি এমন ভাবে শুনছিলেন যেন তার কোন প্রিয়-বাধ্যগত ছাত্র তিনাকে কোন মজার গল্প বলছে আর তন্ময় হয়ে শুনছিলেন। অনেক গল্প করার পর অবশেষে বিকেল ৫ টার দিকে আমরা বিদাই নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। সেদিন বেশ ভালো লেগেছিল। আমি জীবনে অনেক মানুষের রান্না খেয়েছি। তবে হাতে গোণা মাত্র কিছু মানুষের রান্না আমি আজও  ভুলি নি। তাদের মাঝে আমাদের শ্রদ্ধেয় ও গুণী ভাবীও পড়েন। আমি ঠিক করেছি যখনই দেশে যাব, তখনই একদিন অন্তত সময় করে ভাইয়ার বাসায় খাব। আমি জানি আমায় বলতে হবে না, দেশে গেলে সুমন ভাইয়াই কান গরম করে দিবে একটি কথা বলে, তুই কবে আমার বাসায় আসবি …………

সুমন ভাইয়ার সাথে আমার পরিচয় বেশি দিনের নয় তবুও অল্প দিনেই সে আমায় তার অনেক কাছে টেনে নিয়েছে। অতি সহজেই মানুষকে আপন করে নেওয়ার গুণটা আমার এই ভাইটির আছে আমি জানি। আমাদের এই পথচলায় জীবনের বিভিন্ন বাঁকে বিভিন্ন ধরনের যাত্রি জোটে কিন্তু তাদের মাঝে কত জনের কথা আমাদের মনে থাকে বলুন ??? মনে থাকে শুধুমাত্র কিছু মানুষের কথা। আমি দেশের বাইরে আসার পর আমার পরিবারের বাইরে মাত্র ২/৩ জন মানুষ আমার নিয়মিত খবর নিয়েছে আর তাদের মাঝে সুমন ভাইয়া অন্যতম। আমি আমার কাছের মানুষগুলোর কাছে বেশি কিছু কিন্তু চাই না। শুধু মাত্র আমার একটু খবর নিবে তাতেই আমি মহা-খুশি। 

মানুষকে ভালো লাগতে কি বেশি কিছু লাগে ? না লাগে না। একটি মানুষকে ভালো লাগার জন্য মুখের একটি কথা,একটি হাসি, একটা মুহুর্তই যথেষ্ট। আর সাথে একটা ফুটফুটে মন দরকার। এগুলোর প্রতিটি সুমন ভাইায়ার আছে। যেদিনই ফোন দেয় এত চমৎকার করে বড় ভাইয়ের দাবি নিয়ে আমার সাথে কথা বলে যে কি বলব ! তার ঐসব কথা গুলো আমার বেশ প্রিয়। তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য রইল অজস্র শুভকামনা আর দোয়া। ইসলাম ধর্মে পূর্ণজন্ম বলে কিছু নেই। যদি থাকত তবে আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতাম, আমার দ্বিতীয় জন্মে যেন তিনি আমায় শৈশবেই সুমন ভাইয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এমন একটি মানুষ তিনি,যার সাথে কাটানো প্রতিটি সময় আপনার ভালো লাগতে বাধ্য। যখনই আমার সাথে দেখা হোক বা কথা হোক, অসীম দাবি নিয়ে কথা বলতে যে তিনি কিভাবে পারেন আমি ভেবে অবাক হই এখনো ! তার এই ব্যাপারটা আমার বড় প্রিয়। আমার একজন প্রিয় কাছের মানুষ সে; আশা করি আগামীতেও থাকবে আর আমাকে ভালোবেসে যাবে এভাবেই…………
 
এই সকল প্রিয় মানুষের ভালবাসার দাম আমি কোন দিন দিতে পারব না, কোন দিন না। তাই আমি ক্ষমাপ্রার্থী।কোন এক গল্পের বইতে পড়েছিলাম, মানুষ একবার ভালোবাসা পেলে তা বারবার পেতে চায়। দ্বিধাহীন ভাবে বলছি, আমিও পেতে চাই। এই সকল কাছের মানুষদের ভালোবাসার প্রতীক্ষায় কাটে আমার প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহুর্ত………            

Saturday, October 16, 2010

আপনি-ই কি সেই সাত-সাগরের মাঝি ????????


আপনি কি জানেন,আব্দুল হাকিম কে ??? তিনি আমাদের দেশের একজন সনামধন্য ব্যবসায়ীক ব্যক্তিত্ব এব‌ং দেশের প্রথম দশজন ধনী ব্যক্তিদের মাঝে অন্যতম। কিছুদিন আগে তিনি দেশের একটি বেসরকারী ব্যাংক থেকে ৭০ লক্ষ টাক ঋণ নিয়েছেন। শুধু তিনি কেন, দেশের অন্যান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিরাও বান্ডিল বান্ডিল টাকা থাকার পরও ঋণ নেয়। তারা বাড়ি কিনতে, গাড়ি কিন্তে, ব্যবসা শুরু করতেও ঋণ নেয়। কেন জানেন ??? কারণ একটাই, কর ফাঁকি দেওয়া। সবাই এটা জানে-ব্যাংক জানে, ব্যাংকের কর্মকর্তারাও জানে, সরকার জানে এমনকি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানও জানে। কিন্তু কিছু বলে না শুধুই কর প্রদানে অনুপ্রাণিত করা আর বছর শেষে কিছু নিয়মিত কর দেওয়া মানুষকে ছাড়া। যদিও এটা প্রকাশ্যে চুরি করার মত একটা ব্যাপার, কিন্তু তবুও সবাই এটাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সবকিছুই চলছে লোনের উপর।ক্ষমতাধর ধনী দেশগুলো গরিব ও  উন্নয়নশীল দেশ গুলোকে ঋণ দেয়। আর সাথে শর্ত জুড়ে দেয়- ঐ টাকা দিয়ে আমাদের কিছু জিনিস কিনে দাও এবং বাকী যা থাকে তা দেশে নিয়ে গিয়ে ভাগাভাগি করে নাও। তারপর, বছরের পর বছর ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে আবার ঋণ দেয়, এবার ঋণ দিয়ে বলে, জিনিস পত্র কেনো, পরামর্শ ফি দাও…………।সবশেষে যখন এ গরিব দেশটা অনেক ঋণগ্রস্থ কয়ে যায় তখন সেই ধনী দেশগুলো আবার বলে, এবার আমার কথা শোনো, আমি যেভাবে বলছি সেভাবে দেশ চালাও…………. শ্রদ্ধেয় পাঠক, একবার ভাবুন তো আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা কি এর চেয়ে ব্যতিক্রম ????????

গোটা বিশ্ব আজ  মালয়শিয়াকে একনামে চেনে। তৃতীয় বিশ্বের মহাদেশ হিসেবে খ্যাত এই দেশটিকে দেখলে আপনার মনেই হবে না এটা এশিয়া মহদেশের অন্তর্গত কোন দেশ। এখানে নেই যেমন মানুষে গিজগিজ করার মত দৃশ্য, নোংরা রাস্তাঘাট তেমনি নেই সীমাহিন দুর্নীতি, রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যাম। নেই রাহাজানি, ছিনতাই, টেন্ডাবাজি এবং ছাত্র রাজনীতির নামে চরিত্র নষ্ট করার মত বাস্তব প্রশিক্ষণ; দখল বাণিজ্য কিংবা অধিপত্য বিস্তারের নোংরা প্রচেষ্ঠা নেই। এখানে নেই রাজনীতিবিদদের বিরক্তিকর গালাগালি, ক্ষমতাবানদের সন্তানগুলোর ক্ষমতা প্রদর্শন, নেই দায়িত্ব পালন না করে প্রাইভেট ক্লিনিক এ ডাক্তারদের সময় কাটানো, নেই প্রকৌশলীদের ঘুষের টাকা ভাগ বন্টন করে নেওয়ার চরিত্র, তেমনি নেই নিরাপত্তা কর্মীদের জনগণকে নিরাপত্তাহীণ করে রাখার নোংরা কৌশল……….. এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে একজন আদর্শ নেতার জন্য। আর তিনি হলেন মাহাথীর মোহাম্মদ। মাত্র ২০ বছরে একটি অনুন্নত দেশকে কিভাবে বিশ্বের দরবারে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা যায় তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি নিজেই।

যতদূর জানি, তিনি অন্যায়-অসংগতি পছন্দ করতেন না। তথাকথিত রাজনীতিবিদদের মত স্বজনপ্রীতির রাজনীতি করে যেতে পারতেন, ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার সময় নিজের ঘনিষ্ট আত্মীয়কে ক্ষমতার চেয়ারে বসাতে পারতেন, যেমনটা করে এশিয়া তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদরা। পারতেন সুইস ব্যাংক এ টাকার পাহাড় গড়তে…………কিন্তু এসবের কোন কিছুই তিনি করেন নি। ক্ষমতায় থাকার জন্য মানুষ কত কি করে- মানুষ মানুষকে বিপদে ফেলে, মেরে ফেলে, সারাক্ষণ মিথ্যা বলে, বিদেশীদের লেজুরবৃত্তি করে………… তিনি তাও করেন নি। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পছন্দের মানুষকেও চাকরিচ্যুত করতেও দ্বিধা বোধ করেন নি………..এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কতজন নেতার আছে বলুন ??? অথচ মাহাথীর মোহাম্মদ যা করেন নি তাই করছে আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা। ক্ষমতায় যাওয়ার পর পরই তাদের চেহারা পাল্টে যায়, সম্পদ পাল্টে যায়, আচরণ পাল্টে যায়। তারা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যায় এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা নির্বাচনে ব্যয় করেন। দেশের সেবা করা, দেশের মানুষের সেবা করার পরিবর্তে তারা নির্বাচনকে পরিণত করেছে টাকা উপার্জনের একটি ব্যবসায়।মনে হয় আমাদের দেশটা যেন তাদের লিজ নেওয়া কোন সম্পত্তি।পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতার হাত বদলের পরও যেমন খুশি সেভাবে দেশ পরিচালনা করতে থাকে তারা। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। একমাত্র দরিদ্র মানুষেরাই জানেন জীবনের অর্থ কত কঠিন, সন্তানকে মানুষ করা, লেখাপড়া শেখানো কত সাধনার, কত কষ্টের। দুর্নীতি আর টেন্ডারবাজি নিয়ে একদিন আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, উত্তরে আমাদের তিনি বলেছিলেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা !!!!!!! সাবেক এক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক সময় বলেছিলেন, মাটির দশ হাত নিচ থেকে হলেও নাকি সন্ত্রাসী খুঁজে বের করা হবে। অথচ সত্যি কথা কি জানেন ? সন্ত্রাসীরা এসব মন্ত্রী-এমপিদের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়, তাদের ছায়াতলে থাকে, তাদের পকেটে বসে নিঃচিন্তে ঘুমোয়।ইনারা হলেন আমাদের দেশের তথাকথিত, সম্মানিত রাজনীতিবিদ। 

বিশ্বের ক্ষমতাবানদেশের ক্ষমতাবানদের প্রকাশ্যে সমালোচনা করার মত সাহস আর হৃদয় আমাদের দেশের লেজুরবৃত্তিকারী রাজনীতিবিদদের নেই। প্রতিবার নির্বাচনের সময় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসব রাজনীতিবিদদের ভোট দেয় পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে, একটু ভালো থাকার উদ্দেশ্যে, দেশের উন্নতির স্বার্থে। কিন্তু আমরা কি পেয়েছি একজন সৎ, আদর্শবান মাহাথীর মোহাম্মদ এর মত কোন রাজনীতিবিদ ??? না, পাই নি। কিভাবে মোহের মাঝে নিজেকে নিলোর্ভী রাখা যায়, কিভাবে সৎ, মহৎ আর উদার মনের মানুষ হওয়া যায় এগুলো আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা জানেন না। তারা শুধু টাকা আর ক্ষমতার লোভের বসে নির্বাচন করেন। আমাদের এই সব রাজনীতিবিদ যারা আমাদের দেশকে একটা পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তাদের উচিত মাহাথীর মোহাম্মদ এর মত একজন আদর্শ নেতার গুণগুলো আত্তস্থ করা তারপর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া। আজও  আমাদের দেশের মানুষ একজন সৎ, আদর্শবান নেতার সন্ধান করে চলেছে যে আমাদের দেশকে পৃথিবীর বুকে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করবে, দেশের সম্পদের সর্বোচ্চ সঠিক ব্যবহার করে দেশের মানুষের সেবা করবে, মানুষকে মিথ্যে স্বপ্ন দেখাবে না, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করবে। অনেক খুঁজেছি অনেক, কিন্তু পাই নি । পাই নি আজও  এরকম একজন নেতা………….। 

এরকম একজন নেতা আকাশ থেকে আসবে না। আমাদের মাঝে থেকে কাউকে হতে হবে।আমাদের মাঝে থেকেই কাউকে সাত-সাগরের মাঝি হয়ে আমাদের অতি প্রত্যাশিত তরীটিকে কাঙ্খিত তীরে ভিড়াতে হবে। একবার ভাবুন তো, আপনি কি সেই মানুষটি……??? আপনি কি সেই সাত সাগরের মাঝি ??? যদি হোন তবে আজকেউ জেগে উঠুন………
 
১৫ কোটি মানুষ আপনার অপেক্ষায়………… একবুক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে………….  

Monday, October 11, 2010

খোলা চিঠি……….

আমি আগের ঠিকানায় আছি। সময় পেলে এসো একবার. দুজনে কিছুক্ষণ বসি পাশাপাশি.. আমি আগের ঠিকানায় আছি ……………”
আমার কাছের মানুষেরা আমার ঠিকানায় আসবে না আমি জানি। কেউ এসে বলবে না, তুমি সত্যি ভাল আছ তো ? তবুও আমার আজঅব্দি আমার কাছের মানুষগুলোর প্রত্যাবর্তনের আশায় প্রহরগোণা………..

প্রিয় লীলা,
বুকের ভিতর কেমন যেন করছে আমার। কোন কোন রাতে এমন হয় আমার। কোন কিছুই করতে ভাল লাগে না; না গল্প করতে, আড্ডা দিতে, না গুমোতে, না গল্পের বই পড়তে। ফাঁকা ফাঁকা লাগে সবকিছু- মাথার ভিতর, বুকের ভিতর, আশেপাশের চারপাশ। তাই ভাবলাম একটা চিঠি লিখি। কিন্তু কাকে লিখা যায় ? ভাবতে ভাবতে প্রথম তোমার কথাই মাথায় আসলো। ভয় হয় চিঠির মূল্য না দিয়ে অবঙ্গা করে ? কারণ আমি শুধু আমার কাছের মানুষগুলোকেই চিঠি লিখি। খুব যত্ন করে লিখার চেষ্টা করি। একটা কথা কি জান, আমি আমার কাছের মানুষগুলোকে খুব ভালবাসি। আমার কাছের মানুষগুলো আমায় যতটা ভালবাসে, আমায় যতটা ঘৃণা করে তার চেয়েও বেশি। হাঁ তার চেয়ের বেশি…………..

তোমায় লিখা এটা আমার প্রথম আর হয়ত এটাই শেষ চিঠি।একটি ছেলে একটি মেয়েকে চিঠি লিখলেই যে সেটি প্রেমপত্র হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এটা তারাই বিশ্বাস করে যারা সংকীর্ণমনা, যাদের বন্ধনের প্রতি বিশ্বাস নড়বড়ে। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে আমরা চিঠি লিখা প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। অথচ তুমি কি জান, চিঠির মাধ্যমে শব্দমালা দিয়ে তুমি অপর একটি মানুষের মন ছুয়ে দিতে পারবে………

বিশ্বাসটা অনেকেই করেন- যারা গুছিয়ে কথা বলতে পারে, তারাগুছিয়ে লিখতে পারে না আর যারা গুছিয়ে লিখতে পারে তারা গুছিয়ে বলতে পারে না।কিন্তু আমার বেলা দুটোর কোনটিই খাটে না কারন আমি দুটোর কোনটিই পারি না……….!!!!! যা বলতে চাই তা বোঝাতে পারলেই আমি স্বার্থক………

প্রিয় লীলা, ভালবাসার মানুষতো তাকেই বলে যে, আমার পিছনেও হাঁটবে না আমার সামনেও হাঁটবে না, বরং আমার হাত ধরে আমার পাশাপাশি হাঁটবে। যার অনুভূতি আর অস্তিত্বে থাকবে আমার প্রগাঢ় উপস্তিতি আর ছোঁয়া।যার হাত ধরে আমি আমার সীমাবদ্ধতা গুলোকে অতিক্রম করার সাহস করবো। অথচ কি অদ্ভুত দেখো ! আমার মত একটা মানুষকে দুদিন দেখেই, আমার সাথে কথা বলেই নাকি তোমার ভাল লেগে গেল !!!!!! তুমি অন্য একটি ছেলেকে ভালবাসতে, সেও তোমায় ভালবাসত এবং এখনো বাসে। আমার প্রতি হয়ত তোমার ভাল লাগার সূচনা হয়েছিল, কিন্তু ভালবাসার সৃষ্টি হয় নি। একটি মানুষের ছায়া কি অন্য একটি মানুষের মাঝে চাইলেই দেখতে পাওয়া যায় বল ? না, যায় না। কারন আমরা প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র, তেমনি স্বতন্ত্র আমাদের চিন্তাভাবনা, স্বপ্ন……… তোমার ভালবাসার মানুষটির সাথে তোমার সমস্যা গুলোর কথা গুলো শেয়ার কর, দেখবে সমাধান সেখানেই বেড়িয়ে আসবে। তুমি তার  সাথেই সুখে থাকবে……….

মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ কি বলতে পারো ? মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হল সরলতা। এই সরলতা এমন একটি গুণ যার মাঝে থাকে না কোন ভণিতা, কোন স্বার্থ, কোন উদ্দেশ্য……… স্পৃহাহীণ আমি এক অদৃশ্য পরিচালকের আঙ্গাবহ দাস। নিজেই নিজের জন্য যে গোলক ধাঁধা তৈরি করেছি তা থেকে কি চাইলেই আমি বের হয়ে আসতে পারি ??? না, পারি না। বাইরে থেকে কি বোঝা যায় একটি মানুষের ভিতরে কি চলছে ? না, যায় না। আমার মাঝে যে একটি নয় হাজারো পলিপ আছে তা আমি জানি। আর এক একটি পলিপ তৈরি হয়েছে এক-একটি ভুলের জন্য, এক একটি ব্যর্থতার জন্য, কাছের মানুষগুলোর কাছে থেকে অবহেলা পাবার জন্য, কাছের কিছু বন্দুদের দ্বারা বারবার Betray এর সীকার হওয়ার জন্য……..। 

কবিতা পড়তে আমার  খুব ভাল লাগে। এটি আমার একটি অতি প্রিয় কবিতা। না, আমি লিখি নি। রেডিও আমার এ প্রতি শুক্রবার ছেঁড়াপাতা নামক একটি কবিতার অনুষ্টান হয়। এটা আমার খুব প্রিয় ছিল। যখন দেশে ছিলাম তখন প্রতি শুক্রবার নিয়ম করে শুনতাম। সেখান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

কি দেব তোমায় বল ?
আমি যে মেঘ নই যে তোমায় বৃষ্টি দেব
আমি অসীম নীলিমাও নই যে তোমায় স্নিগ্ধতা দেবো
আমি এক ব্যথিত মানুষ, এমন হৃদয় ভরা ভালবাসি কই ?
আমার ঘরে ফুল ফোটাব, ককনো হাসির রাশি দেব উপহার
তার মত কিছুই তো নেই !!!!!
আমার হাতদুটি এত আলোকিত নয় যে,
অসুখী শরীরে ছোঁয়া দেব আর ছেরে যাবে তোমার সব অসুখ।
আমিতো শিশির নই যে তোমার রুক্ষপত্র সিক্ত করবো
আমি কোন কুলুকুলু নদী নই যে,
তোমার হৃদয়ের শস্যক্ষেত ভিজিয়ে দেবো।
এমনকি কোন অরণ্য উদ্বিদ নই যে,
তোমার দুঃখের পাশে ফুটেঁ থাকবো চাঁপা কি বকুল হয়ে।
আমি কোন শিউলি নই তোমার, ভোরের শুভ্র শয্যা বিছাব।
আমি কোন তৃণ নই যে, বুক পেতে দেব মাথা রেখে অবসাদে শোবে।
এমনকি ঝড়া পাতাও নই যে, বন হবো
ভালবেসে টিপটাপ সারারাত ঝড়বো তোমার সিথানে।
আমি শুধু দিতে পারি ………………… একগুচ্ছ কষ্ট  ।।
[ সংগৃহীত ]

জীবনে আমি অনেক ভুল করেছি। মাঝে মাঝে মনে হয় ভুল কোন জীনিসই জীবনে রাখতে নেই। আমরা প্রতিটি স্বতন্ত্র মানুষের কাছে জীবনের অর্থও ভিন্ন ভিন্ন। চারদিকে অসংখ্য ভুলের ছড়াছড়ি। বুকভরা ভালবাসা নিয়ে চলতে চলতে আমার কেবলই মনে হঢ আমার চিন্তার পূর্ণজন্ম হয়েছে। প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা, প্রবঞ্চিতকে দেয় দাহ আর অনুতপ্তকে কি দেয় ? প্রেম, অনুতপ্তকে দেয় হাহাকার। তীব্র হাহাকার, পাঁজর ভাঙার মত হাহাকার……………….

আমাদের এখানে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে অথবা রাতে বৃষ্টি হয়। আজ  চমৎকার জ্যোৎনা উঠেছে। আকাশের ঠিক মাঝখানে যেমন মায়াবতী নারীরা কপালের ঠিক মাঝখানে টিপ পড়ে, তেমনি পুটে আছে চাঁদ মামা। আর সূর্যথেকে আলো নিয়ে তাকে জ্যোৎস্নায় রূপান্তরিত করে আমারদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। চারদিক জ্যোৎনার বন্যায় ভেসে যাচ্ছে।আমার মত ঘূণেধরা,আট পৌরে মানুষগুলো যারা হাজারো পলিপ নিয়ে চলে, তারাও আজ  জ্যোৎনার রূপালী আলোয় নিজের ছায়া দেখতে পায় যেমন করে আমি পাচ্ছি। সব মানুষ, দালানকোঠা, জীবজন্তু, পশুপাখি ইচ্ছেমত জ্যোৎস্না গায়ে মেখে আনন্দে অবগাহন করছে। আমার মত ঘূণেধরা মানুষগুলো আকাশের দিকে তাকিয়ে জ্যোৎস্না গায়ে মাখতে মাখতে ভবিষ্যতের স্বপ্নে আচ্ছন্ন হয়। নিজের গোলাপ পূর্ণ হৃদয় সম্পূর্ণ সমর্পণ করতে চায় ভালবাসার মানুষঠটকে আর ভালবাসার মানুষটিকে আলিঙ্গন করে অন্তহীণ সুখ অনুভব করতে চায়। আমার কাছে যদিও সুখটির চেয়ে স্বপ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। কারন সুখের স্বপ্ন, সুখের চেয়ে প্রলম্বিত। সুখ মুহুর্তের আর স্বপ্ন ……………???
স্বপ্নতো চিরদিনের……………………..       

Tuesday, October 5, 2010

ঘুরে এলাম কক্সবাজার, রাঙামাটি, হিমছরি…………..


গত বছরের মে মাসের শেষের দিকে আমার বন্ধু সাফিল এর পরিবারের সাথে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বেড়াতে গিয়েছিলাম। ভ্রমণ আমার ছোটবেলা থেকেই খুব প্রিয়। মজাও করেছি খুব। সাগরের জ্বলে নেমেই মনে হয়েছে যেন আমি, রিয়াজ, সাফিল, বোরহান মামা মিলে একদল শিশু সমুদ্রের জ্বলে গা ভিজিয়ে জ্বল নিয়ে খেলা করছে। আমার মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি গুলোর বর্ণনা দিতে গেলেই মানুষ বুঝি শব্দ বঞ্চনায় ভোগে।যেমনটি ভুগছি এখন আমি। আর তাইতো হয়ত কবি বলেছিরেন, ভাব যেখানে গভীর, ভাষা সেখানে নীরব।আনন্দের সৌরভটা আমর মাঝে আজও অম্লান, এখনো আমি তার স্নিগ্ধতা অনুভব করি-সাগর, সাগরের বিশাল জ্বলরাশি…….। 

ঢাকা থেকে কক্সবাজার- দীর্ঘ একটা সময়ের ভ্রমনের পর কোচ এর জানালা দিয়ে প্রথমেই চোখের দৃষ্টি সীমানায় ধরা পড়ে, সাগরের বিশাল বিস্তৃত জ্বলরাশি আর সাগরের মনোমুগ্ধকর স্রোত। সাগর পাড়ে ঢেউগুলো ক্ষণে ক্ষণে আচড়ে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল, ঢেউগুলো যেন একে অপরের সাথে খেলা করছে। আর আমাদের বলছে, তোমরাও এদিকে এসো। এই জ্বলের মাঝে অবগাহন করো। দেখো ! আমি তোমাদের সিক্ত করে দিবো, আর তোমাদের মাঝে যাদের অনেক দুঃখ-কষ্ট, পলিপ আছে তাদের কাছে সে সব কিছু নিয়ে আমি আমার বক্ষে ধারণ করবো। এসো বন্ধু, এসো নীপবণে, এসো কর স্নান স্ত্রোতধারা জ্বলে………

রাঙামাটি, টেকনাফ, হিমছরি, ফয়েজ লেক কত জায়গায় যে বেড়িয়েছি !!!! এবার আসি রাঙামাটি যাওয়ার বর্ণনায়.. রাঙামাটি যাওয়ার পথ হল পাহাড়ি আঁকাবঁাকা, উঁচু-ঢালু রাস্তা। মাঝে মাঝে এমন বাঁক চোখে পড়বে যে, আপনার হৃদয় আতকে উঠবে। আবার মাঝে মাঝে অনেক উঁচুতে উঠতে হয় যেন আকাশকে ছোঁয়ার ব্যাকুল আশা নিয়েই আমরা চলছি। আবার মাঝে মাঝে এমন ঢালু হয়ে যায় যেন মনে হয় আমরা জ্বল-প্রপাতের জ্বলরাশির মত সগৌরবে আচড়ে পড়ছি…….। আর রাস্তার দুধারে বিশাল গাছের সারি। পাহাড়, পাহাড়ি সরল মানুষ, বিচিত্র পাখি …………. সবমিলিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক ভারসাম্যে প্রকৃতির রূপের মাঝে আমাদের প্রকৃতি দর্শন আর ভ্রমণ………

প্রকৃতি আসলেই তার অপূর্ব সৌন্দর্য দিয়ে আমাদের ভরিয়ে রেখেছে। ছোট ছোট নদীর চারপাশে পাহাড়, পাহাড়ি বসতি, বিভিন্ন গাছপালার সারি, নদীতে বিভিন্ন নৌকার চলাচল আমাদের মনকে বিমোহিত করে।আমাদের প্রকৃতির প্রেমে আরো উদ্বেলিত করে। আমাদের সাথে প্রকৃতি তার আত্মার বন্ধন আরো দৃঢ় করে। আমাদের উদ্বুদ্ধ করে মানুষকে আরো বেশি ভালবাসতে……। আর সাগরে স্নান……….? তার রোমাঞ্চের কথা বলে শেষ করার মত ভাষা আমার নেই। আমার মনে হয়, আমাদের প্রত্যেকেরই অন্তত জীবনে একবার হলেও সাগর দেখতে যাওয়া উচিত, সাগরের জ্বলে গা ভাসানোর আনন্দ নেওয়া উচিত। আমার বিশ্বাস, মানুষ একবার গেলে আবারও যেতে চাইবে কারন প্রকৃতি কেবলই তার প্রেমে মানুষকে মত্ত করতে চায় তার সৌনন্দর্য দিয়ে…………

শেষ করবো সাগরে সৌর্যাস্ত দেখার বিবরণ দিয়ে…… সাগর পাড়ে দাড়িয়ে বিশাল জ্বল-রাশির দিকে তাকিয়ে আছি আর ঢেউগুলো আমার পায়ে আচড়ে পড়ছে, ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আমার পা, সিক্ত হয়ে মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছে আমার শরীর।আর সে সময় যদি ভালোবাসার মানুষটি পাশে থাকে তবে সূর্যাস্ত দেখার আনন্দটা হবে অনুভবের কারণ এটাকে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। গোধূলী লগ্নে সোনালি আলো আমাদের উপর এসে পড়বে আর ঢেউ গুলো আচড়ে পড়বে। ঠিক তখন ভালবাসার মানুষটির হাতটা ধরে চিৎকার করে আমার বলতে ইচ্ছে করে, ওই সাগর, অস্ত যাওয়া সূর্যকে সাক্ষী রেখে আমি বলছি, আমি তো্মায় ভালবাসি। জীবনের আমার এই পথে আমি তোমার হাতটা ধরে রেখে পাড়ি দিতে চাই। চাই তোমার আর আমার স্বপ্নের বানস্তবায়ন করতে……………

আর এভাবেই আলো-ছায়ার গল্প আর নির্মল-স্নিগ্ধ স্বপ্ন আঁকতে আঁকতে শেষ হয় কক্সবাজার ভ্রমণের শেষ অধ্যায়টি………..
সত্যি কি অধ্যায় শেষ হয়ে যায় ??? না, কখনো না। একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হয় অন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হওয়ার জন্যই তো ………… তাই না ?