Friday, October 1, 2010

পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব !!!!!!!!!!!!!


বিলাল মাহমুদ নামের একজন বিদেশী পর্যটক বাংলাদেশে এসে সিলেট, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, কুয়াকাটা সহ আরো অনেক জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছে। হোটেল ফার্মগেট এ বসে সকালের নাস্তা করছিলাম ঠিক তখনই তার সাথে পরিচয়।কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, সেই পর্যটকের বাড়ি পাকিস্তানে এবং তার  অনেক আত্মীয় থাকে ইরাকে, যাদের প্রতিদিনের সকালের ঘুম ভাঙ্গে বারুদের শব্দে এবং প্রতিদিন রাতে তারা ঘুমোতে যায় মর্টারের আওয়াজ শুনে…………… আমরা সবাই জানি, আজ বিশ্বের প্রধান প্রধান শক্তিধর দেশগুলোর মাঝে চলছে পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণের হীণ প্রচেষ্টা। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পদটা যে পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষমতার তা বলাই বাহুল্য। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বারাক ওবামা দৃঢ় সংকল্প আর আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছিলেন, Change we need. যার বাংলা অর্থ দারায়- পরিবর্তন আমাদের প্রয়োজন।আসলে তিনি তার  এই বক্তব্যের মধ্যদিয়ে গোটা বিশ্বকে কি বলতে চেয়েছিলেন সেটাই পরিষ্কার নয়। হয়ত বলতে চেয়েছিলেন আমেরিকার মানুষদের মানসিকতার পরিবর্তন অথবা বিশ্বর অন্যান্য দেশগুলোর প্রতি তাদের আগ্রাসী নীতির পরিবর্তন …………….

একটা কথা হয়ত সব দেশের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মানুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে, তারা নির্বাচনের আগে ভোটারদেরকে নতুন স্বপ্নের কথা বলেন, বলেন নতুন প্রত্যয়ের কথা……….. অতপর একবার ক্ষমতার চেয়ার স্পর্শ করলেই তিনি ভুলে যান নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি !!!! ইরাকে যে অমানুষিক নৃশংসতার সূচনা করেছিলেন জর্জ ডাব্লিউ বুশ, এখনো কিন্তু তার ধারাবাহিকতা চলছে। আজও  সেখানে শিশুরা যখন তাদের জীবনের সবচেয়ে মোহময় শৈশব পার  করছে তখন তাদের সকালের ঘুম ভাঙ্গে মর্টারের শব্দে, তারা রাতে জ্যোৎস্নায় রূপালী চাঁদের পরিবর্তে আকাশে দেখে বিভিন্ন বিস্ফোরকের আলো, তারা রজনীগন্ধা ফুলের মত কোন ফুলের গন্ধের পরিবর্তে বারুদের গন্ধ পায় প্রতিনিয়ত। অসংখ্য নারী বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের সেনাবাহীনির সৈন্যদের ভোগ্যপণ্য হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ এই সব ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ক্ষমত্ধর ব্যক্তির মুখেই শুনবেন মানবতা নামক শব্দটি নিয়ে স্তূতি আর বন্দনা। বলতে দ্বিধা নেই, মানবতা নামের শব্দটি এসব ক্ষেত্রে, এসব জায়গায় এবং এই সব ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের দ্বারা অপমানিত হতে হতে তলানীতে এসে পৌচেছে।এখনো আফগানিস্তানে মানুষ মারা যাচ্ছে পিঁপড়ের মত, সব হারিয়ে নিঃস জীবনযাপন করছে হাজারো মানুষ।

তবে এবার বলুন আমেরিকার বিদেশনীতির কতটুকু পরিবর্তন হলো ? পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার আহবানের পেছনে কি আমেরিকা পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরার কাজ ছেড়ে দিয়েছে ??? না, কখনো না। ইসরায়েলকে পেছনদিক থেকে সব প্রকার সহযোগিতা করছে আবার ইরানের উপর পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরার ব্যাপারে নিষেধাক্কা আরোপ করছে। পাশাপাশি কিউবা, ভেনেজুয়েলার মত অন্যান্য দেশগুলোর মূল্যবান সম্পদের প্রতি আগ্রাসন তাদের এখনো চলছে, চলছে ছোট দেশ গুলোকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা। পারমাণবিক অস্ত্র এখন কার সবচেয়ে বেশি ? আমেরিকার অস্ত্র বিক্রি কি সত্যিকারে কমেছে ? যদি পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার আহবান জানানো হয় তাহলে অস্ত্র বানানোর বা বিক্রি করার প্রয়োজন কি ? কাকে বা কাদের ভয় করছে আমেরিকা ? আমি জানি, খুব সত্য করে জানি এসব প্রশ্নের উত্তর এই সব ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রধানদের কাছে নেই। কারন এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলেই লজ্জায় আর অপমানে তাদের মরে যেতে ইচ্ছে করবে। 

হিংস্র জন্তু যখন ক্ষুধার জালায় ছটফট করতে থাকে তখন সে তার সামনে যা পায় তাই খায়, তেমনি মানুষও যদি দেখে যে, কোন দিন তার আঁতে ঘা লেগেছে তবে সে তার বন্ধুকেও ছাড়ে না। ইসরায়েলকে অবৈধ স্থাপনা গড়তে, ফিলিস্তিন এর নীরিহ মানুষের প্রতি অত্যাচার চালাতে যারা সহযোহিতা করছে তারাই ইসরায়েলকে ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যে নরকের মত আগুন জ্বালাচ্ছে, মানবতার অবমাননা করছে, সুস্হ-সরল জীবন যাপনের মানুষের এই নৈতিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করছে, সম্পদশালী দেশ গুলোর সম্পদ আহরণ করছে নীরবে। সাপ কিন্তু সুযোগ পেলে ছোবল মারবেই- এটাই নিয়ম। তাই ইসরায়েল এর আঁতে কোন দিন ঘা লাগলে তারাই সে সব শক্তিধর দেশের উপর পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করবে যারা আজ  ইসরায়েলকে পরমাণু অস্ত্র সহ বিভিন্ন দিক দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে। এভাবেই একদিন আমেরিকারও পতন ঘটবে। পারমাণবিক বোমা, পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন, স্বপনই থাকে যাবে !!! আমরা আমাদের আগামী দিনের প্রজন্মকে ভালো কিছু উপহার দিয়ে যেতে পারবো না ।ফলে তারা আমাদের মনেও রাখবে না বরং ধিক্কার দিবে……. আমাদের কর্মের জন্য, নীরব অবস্থানের জন্য……….